চাঁপাইনবাবগঞ্জে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সব ধরনের মুরগের দাম। সেই সঙ্গে বেড়েছে মাছ, গরু, খাসির মাংসের দামও। শুক্রবার জেলাশহরের নিউমার্কেট এলাকায় অবস্থিত মুরগিপট্টি, মাংসপট্টি, মাছপট্টি, মুদিপট্টি ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব জিনিসের দাম ঊর্ধ্বমুখী।
মুরগি বিক্রেতা আদ্বুর রহমান জানান, পাকিস্তানি বা সোনালি মুরগির দাম ঊর্ধ্বমুখী। সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে। তিনি জানান, আজ শুক্রবার প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ২৮০ থেকে২৯০ টাকা।
মোঃরুবেল আলী নামের আরেক বিক্রেতা জানান, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি দেশী মুরগির দাম ছিল ৫০০ টাকা। এ সপ্তাহে এক লাফে ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায়। মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বিক্রেতা জানান, আগের তুলনায় সরবরাহ কমে গেছে।
আজকে পোল্ট্রি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা। ১৫ দিন আগে এ মুরগির প্রতি কেজি দাম ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। মোঃ ইসমাইল আজম নামের আরেক বিক্রেতা জানান, লাল লেয়ার প্রতি কেজি ৩০০ টাকা ও সাদা লেয়ার ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে বলে তিনি জানান।
প্যারেন্টস মুরগি বিক্রেতা নাসিরুল ইসলাম জানান, এই মুরগির দাম বৃদ্ধি পেয়ে বতর্মানে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৫০ টাকা। এই জাতের মুরগি গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আনা হয়। কিন্তু রাস্তা খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরবরাহ কমে গেছে ফলে দামও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে গরুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মাংস বিক্রি করে লাভ হচ্ছে না। তাই দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। গরুর মাংস বিক্রেতারা বলেন, মুরগির দাম বেশি হওয়ায় গরুর মাংসের চাহিদা বেড়েছে কিন্তু চাহিদামতো গরু পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা থেকে তার উপরে।
রফিক কসাই জানান, শুক্রবার গরুর মাংস বিক্রি হলেও আগের তুলনায় সপ্তাহের অন্যদিন বিক্রি অনেক কমে গেছে। তিনি জানান, খাসির মাংস প্রতি কেজি ১ হাজার টাকা এবং বকরির মাংস ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছপট্টিতে বড় সাইজের ট্যাংরা প্রতি কেজি ৮০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা, পাবদা ৩৬০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা, পিয়ালি প্রতি কেজি ৮০০ টাকা, দেশী শিং ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজিপট্টির আব্দুল গাফফার জানান, সব ধরনের সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে বেড়েছে কাঁচামরিচ ও বেগুনের দাম। কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ১৬০ টাকা থেকে বেড়ে ১৮০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে কাঁচকলা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ব্রকলি প্রতি পিস ৩০ টাকা, ফুলকপি ২০-২৫ টাকা, পাতাকপি ১৫-২০টাকা পিস, পেঁপে ২০-২৫ টাকা কেজি, এছাড়া পটোল ১২০ টাকা, টমেটো মান ভেদে ১৫ টাকা থেকে শুরু করে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুদি বাজারের বাবু নামের এক দোকানি জানান, খোলা চিনির দাম বর্তমানে ১১২ টাকা প্রতি কেজি। চালের দাম আগের মতোই রয়েছে।
মাহফুজ নামে এক ক্রেতার সাথে কথা বলে জানতে পারি, তিনি লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা কেজি দরে কিনলেন। তিনি আরও জানান ৪০ টাকা দরে শসা কিনলেন যাআগের চেয়ে বর্তমানে ঊর্ধ্বমুখী।
সিয়ামুল ইসলাম নামে আরেক ক্রেতা জানান, ১ হাজার টাকা নিয়ে এসে সবজি ও মুরগী কিনতেই টাকা শেষ। যেখানে আমরা এক সময় ৫০০ টাকার মধ্যে আমার এবং আমার পরিবারের সবার চাহিদা অনুযায়ী তরিতরকারি কিনাযেত। এখন টাকার চেয়ে শাকসবজি ও মাংশের যা দাম, এই দামে আমার মতো মধ্যবিত্তদের অনেক ভোগান্তি হচ্ছ।
বাজার করতে আসা ময়েজ উদ্দিনসহ আরো অনেকে বলেন, মধ্যবিত্তদের মাছ-মাংস ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: