
নির্দেশনায় বলা হয়, পাকিস্তান থেকে উৎপন্ন অথবা তাদের ভূখণ্ড অতিক্রম করে আসা যেকোনো পণ্য ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হবে। এতে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনস্বার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে কিছু পণ্যে বিশেষ অনুমতির ভিত্তিতে শর্তসাপেক্ষে ছাড় দেওয়া হতে পারে।
গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পর্যটন এলাকায় চালানো হামলায় কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হন। এই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার এই ঘটনার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দোষীদের বিচার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেয়। যদিও পাকিস্তান হামলার দায় অস্বীকার করে এবং ভারতকে সতর্ক করে জানায়, যেকোনো ধরনের সামরিক পদক্ষেপের জবাবে তারাও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।
এই ঘটনার পর ভারত একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সিন্ধু নদী চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে, পাকিস্তানিদের দেওয়া ভিসা বাতিল হয়েছে, কূটনীতিকদের বহিষ্কার করা হয়েছে এবং পাকিস্তানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত করেছে এবং তাদের আকাশসীমা বন্ধসহ ভারতীয় কূটনীতিকদের দেশত্যাগে বাধ্য করেছে। পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, ভারতের যদি সিন্ধু নদীর পানি সরবরাহ বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়, তবে সেটিকে তারা সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে দেখবে।
গত কয়েক বছরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ভারত পাকিস্তান থেকে মাত্র ৪ লাখ ২০ হাজার ডলারের পণ্য আমদানি করে, যা আগের বছরের তুলনায় অনেক কম। একই সময়ে পাকিস্তানে ভারতের রপ্তানি কমে দাঁড়ায় ৪৪ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, যেখানে আগের বছর ছিল ১১০ কোটি ডলার।
এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহল থেকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দুই দেশকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িত যেকোনো ব্যক্তি, সহায়তাকারী এবং পৃষ্ঠপোষক— কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: