চাঁপাইনবাবগঞ্জ | বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ info@mohanonda24.com +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩
ভারতের কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যজুড়ে ভাষা শহীদদের স্মরণে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মহান শহীদ দিবস।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ভাষা শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন মমতা ব্যানার্জির

আ.সা/রিপোর্টার | প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০১:২২

আ.সা/রিপোর্টার
প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০১:২২

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ভাষা শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন মমতা ব্যানার্জির

ভারতের কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যজুড়ে ভাষা শহীদদের স্মরণে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মহান শহীদ দিবস। এই উপলক্ষে মঙ্গলবার কলকাতা বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের পক্ষ থেকে একগুচ্ছ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এদিন সকালে উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ করা হয়।

 
মঙ্গলবার সকালে কলকাতার ৩, সোহরাওয়ার্দী এভিনিউতে অবস্থিত বাংলাদেশ গ্রন্থাগার ও তথ্য কেন্দ্রর সামনে থেকে ভাষা শহীদদের স্মরণে এক সুদৃশ্য প্রভাতফেরী বের হয়।তাদের হাতে নানা বর্ণের পোস্টার, ফুলের মালাসহ এই প্রভাতফেরিতে হাইকমিশনের কর্মকর্তারা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের মানুষ ভাষা শহীদদের স্মরণে অংশ নেয়। 
'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি' এই ধ্বনি সবার মুখে মুখে শুনা যায় এই ধ্বনি কে সামনে রেখেই সেই প্রভাতফেরী কলকাতার পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট ক্রসিং, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড ধরে পৌঁছয় উপহাইকমিশন প্রাঙ্গনে। 
 
এরইপর মিশন প্রাঙ্গণে অবস্থিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক দিয়ে ভাষা শহীদদ সালাম-বরকত-জব্বরদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানান উপ হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, প্রথম সচিব (প্রেস) রঞ্জন সেন, প্রথম সচিব (বাণিজ্য) শামসুল আরীফ সহ অন্য কর্মকর্তারা। সেই সাথে তারা মিশন প্রাঙ্গণে 'মুজিব মঞ্চে' বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতেও মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দূতাবাসের কর্মকর্তারা। 
 
এর পাশা পাশি আলাদাভাবে শহীদ বেদীতে ফুল দিয় ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয় ইন্দো বাংলা প্রেস ক্লাব, কলকাতা প্রেসক্লাব, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতি, বাংলাদেশ বিমান ও সোনালী ব্যাংকের তরফ থেকে। 
 
এর পরে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস নিয়ে বাংলাদেশের মাননীয় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রেরিত এক বাণী পাঠ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় মিশন প্রাঙ্গনে। এদিন বিকালে মিশন প্রাঙ্গনে একটি সেমিনার ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। যেখানে উপস্থিত থাকবেন কলকাতাস্থ বিদেশি দূতাবাসের কর্মকর্তারা। 
 
মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'মাতৃভাষা আমাদের আত্মার শরিক, প্রাণের স্পন্দন। নিজের ভাষার গৌরব ও অধিকার রক্ষার্থে যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের জানাই সশ্রদ্ধ প্রণাম। মাতৃভাষাকে ভালোবেসে সব ভাষাকেই জানাই সম্মান।' 
 
রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমির সভা ঘরে ২১-২৩ ফেব্রুয়ারি তিন দিনব্যাপী ভাষা উৎসব উদযাপন করা হচ্ছে। প্রতিদিন বিকেল পাঁচটা থেকে থাকছে কবিতা পাঠ ও আলোচনামূলক অনুষ্ঠান। 
 
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস উপলক্ষে সোমবার সারারাতব্যাপী অনুষ্ঠান করেছে 'ভাষা ও চেতনা সমিতি' নামে একটি সংগঠন। সোমবার বিকাল থেকেই কলকাতার রবীন্দ্রসদন লাগোয়া একাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনে রাণুছায়া মঞ্চে শুরু হওয়া সারারাতব্যাপী বাংলা ভাষা উৎসবে নাটক, বাউল, লোক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। উৎসবে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, বিহারের পাশাপাশি বাংলাদেশের শিল্পীরাও যোগদান করেন। মঙ্গলবার সকালে প্রভাতফেরির মধ্য দিয়ে সেই অনুষ্ঠানের শেষ হয়। 
 
বাংলাদেশ- ভারত আন্তর্জাতিক সীমান্তের অন্যতম স্থলবন্দর পেট্রাপোল-বেনাপোলের জিরো পয়েন্টে৷ বনগাঁ পৌরসভা ও ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের যৌথ উদ্যোগে পেট্রাপোল বন্দর সংলগ্ন এলাকায় ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে শহীদদের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করবেন দু'দেশের প্রতিনিধি ও ভাষা প্রেমীরা৷
 
 ভারতের শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণেও ভাষা শহীদদের স্মরণে ভারত বাংলাদেশসহ অন্যা দেশের অন্য ভাষাভাষি শিক্ষার্থীরা সমবেত কন্ঠে বাংলা ভাষার গান গেয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি প্রভাতফেরি সম্পন করে।
 
'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো ২১ ফেব্রুয়ারি, আমি কী ভুলতে পারি'- ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের ছাত্র-ছাত্রীরা সমবেত কন্ঠে সঙ্গীত গেয়ে বিশ্বভারতীর বিবেকান্দ সরণী দিয়ে বাংলাদেশ ভবন পর্যন্ত প্রভাতফেরি সম্পন্ন করে। প্রভাতফেরিতে পা মেলান বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীসহ বিশ্বভারতীর অন্য সদস্যরা। বিশ্বভারতীর ছাত্রীদের পরনে ছিল সাদা আর কালো পোশাক। ছাত্রদের পোষাক ছিল শুধুই সাদা। পরে বাংলাদেশ প্রাঙ্গনেই একটি ছোট্ট অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 
 
এই আনন্দের বিশেষ দিনটিকে মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গের জেলা ও মহুকুমাগুলোতে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হচ্ছে 'অমর একুশে'। 
 
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ক্লাব, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার তরফে বিশেষ মর্যাদার সহিত ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রদেশের মানুষ ।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: