চাঁপাইনবাবগঞ্জ | রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ info@mohanonda24.com +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩
জাবের বিন হাইয়ানের পর মুসলিম রসায়নবিদ হিসেবে আবির্ভূত হন আবু বকর মুহাম্মাদ বিন ইয়াহয়া বিন যাকারিয়া আল-রাযী।

জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলমানদের কোন অবদান নেই! (পর্ব-৪)

আ/ স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫৬

আ/ স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫৬

আবু বকর মুহাম্মাদ বিন ইয়াহয়া বিন যাকারিয়া আল-রাযী

জাবের বিন হাইয়ানের পর মুসলিম রসায়নবিদ হিসেবে আবির্ভূত হন আবু বকর মুহাম্মাদ বিন ইয়াহয়া বিন যাকারিয়া আল-রাযী। ৮৬৫ খৃষ্টাব্দে তিনি রায় শহরে জন্ম গ্রহন করেন। চিকিৎসাশাস্ত্রের পাশাপাশি রসায়ন এবং পদার্থ বিদ্যায় তার অবদান অপার ও অসীম। তিনি সর্বপ্রথম ‘সালফিউরিক এসিড’ আবিষ্কার করেন। হাউড্রোজেন এবং সালফেটের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সালফিউরিক এসিড তৈরী হয়। সার উৎপাদনে এটি একটি মূল্যবান উপাদান। এছাড়াও রং, ঔষধ, কিটনাশক, পেইন্ট, কাগজ, বিস্ফোরক প্রভৃতি তৈরীতে প্রচুর পরিমানে সালফিউরিক এসিড প্রয়োজন হয়। আল-বেরুনী আবু বকর আল-রাযীর ১২টি রসায়ন বিষয়ক বইয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি ৯৩২ খুষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেন।

এছাড়াও মুসলিম সোনালী দিনগুলোতে আরো অসংখ্য মুসলিম রসায়নবিদগণ নিজেদের গবেষনা দিয়ে রসায়নের জ্ঞানের জগতকে সমৃদ্ধশীল করেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েক জন হলেন, আব্বাস বিন ফিরনাস (৮১০-৮৮৭খৃ:)। তিনি আবিষ্কারক, প্রকৌশলী এবং উড্ডয়ন বিশারদ ছিলেন। আবু বকর আহমদ বিন আলী বিন কায়েস আন-নাবতী (মৃ:৯৩০খৃ:)। তিনি ইবনে ওয়াহশিয়া নামে অধিক পরিচিত। ইরাকে জন্ম গ্রহনকারী এই মুসলমি রসায়নবিদের রসায়ন বিষয়ক শ্রেষ্ঠ রচনা ‘উসূলুল কাবির’। মুহাম্মাদ বিন ইমায়েল আল-তাতিমী (৯০০-৯৬০খৃ:), আল-মাজরেতি (৯৫০-১০০৭খৃ:), আবুল মানসুর মুয়াফফাক হারবী, ইবনে আব্দুল মালেক আল-কাছী, ইবনে জাহিয, ইবনে রাসসাম প্রমূখ।

চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত রসায়নে মুসলমানদের নতুন নতুন আবিষ্কার যখন পৃথিবীকে আলোকিত করেছিল তখন আজকের ইউরোপ অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। মুসলমানদের বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ক গ্রন্থাবলী শত শত বছর ধরে ইউরোপে গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্য হিসেবে পরিগনিত। ইবনে সিনার চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়ক কালজয়ী ‘আল-কানুন’ গ্রন্থটি ইউরোপের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছয় শত বছর ধরে পড়ানো হয়। অতএব মুসলমানরা কোন কালেই জ্ঞান-বিজ্ঞানে দরিদ্র ছিল না। বরং জ্ঞান-বিজ্ঞানের জগতে দুস্থতার চাদর মুড়ি দিয়ে ইউরোপীয়ানরা যখন অসহায়ত্বের দুয়ারে পড়ে ছিল, তখন মুসলমানরা জ্ঞান-বিজ্ঞানের আকাশে উজ্জল জতিষ্ক হয়ে উদ্ভাসিত হয়েছিল।

আজকের ইউরোপ যে বিজ্ঞান নিয়ে গৌরব করে তা নি:সন্দেহে মুসলিম মনীষীদের উদার জ্ঞানের অপার দান। আগে মানুষ জানত মানুষের মুখের কথা বাতাসে হারিয়ে যায়। কিন্তু কুরআনের কারনে পাশ্চাত্য জানল কথামালা বিসৃত হয় না। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, “তোমাদের প্রতিপালকের আদেশে একদিন সব কিছুই প্রকাশিত হয়ে পড়বে।” (সূরা যিলযাল,৪-৫)। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “তোমরা দু‘টি জিনিসের ব্যাপারে সতর্ক থাক। একটি তোমাদের স্ত্রীরা, অন্যটি এই পৃথিবী, যার উপর তোমরা আস্ফালন করে চলছ।” (সহীহ মুসলিম)।

কুরআন ও হাদীসের এ দু‘টি তথ্য বাতাসে মানুষের কথা রেকর্ড হয়ে থাকার প্রতি ইংগিত দেয়। সুতরাং এ দু‘টি বাণী বেতার আবিষ্কারের সাধনাকে উজ্জীবিত করেছে। অতএব যারা বলে জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলমানদের কোন অবদান নেই, তারা হয় অন্ধ নয় তো অজ্ঞ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: