চাঁপাইনবাবগঞ্জ | রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ info@mohanonda24.com +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩
বিভিন্ন নাটক, সিনেমা, উপন্যাসে জনপ্রিয়তা পেয়েছে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষা।

আমার ভাষায় দেশের সেরা ভাষা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশিত: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:০১

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:০১

প্রতিকী ছবি

বিভিন্ন নাটক, সিনেমা, উপন্যাসে জনপ্রিয়তা পেয়েছে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষা। ভাষা গবেষকদের মতে, সব আঞ্চলিক ভাষাই শুদ্ধ।

কারও মুখে ‘মামুর বুঠা ফাঁপর লিছে’ বলতে শুনলে যেমন বোঝা যায় এটি কোন অঞ্চলের ভাষা, তেমনি অধিক চর্চা ও প্রচারে এর অর্থটাও অন্য অঞ্চলের অনেকের জানা। তারপরও বলে রাখা ভালো, আলোচিত সংলাপটি রাজশাহীর আঞ্চলিক ভাষার। আর এর অর্থ হচ্ছে, জনৈক ব্যক্তি কারও কথার ওপর কথা বলছেন বা খবরদারি করছেন।

জনপ্রিয় একটি টেলিভিশন নাটক সিটি বাস-এ ‘মামুর বুঠা ফাঁপর লিছে’ সংলাপটি বলে অভিনয়শিল্পী রাশেদ মামুন অপু বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। একইভাবে রাজশাহীতে একটি রুটির দোকানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘হারঘেঁ কালাই’, যা মূলত চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলে ‘আমাদের কালাই’–এর স্থানীয় রূপ। আবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষাকে কেন্দ্র করে আছে ‘চাঁপাই ব্লক’।

ভাষা গবেষকদের মতে, বাংলা ভাষার রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক রূপটি বিভিন্ন আলাপ ছাড়াও নাটক, সিনেমা, উপন্যাস, কার্টুনের মাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আবার আঞ্চলিক ভাষার টানে ভিন্ন স্থানে অবস্থান করা মানুষের মাঝেও দল গড়ে উঠতে দেখা যায়। আঞ্চলিক ভাষায় নামকরণের কারণে প্রতিষ্ঠানেরও জনপ্রিয় হওয়ার উদাহরণ আছে।

রাজশাহীর স্থানীয় ভাষা নিয়ে মজার ছলে প্রায়ই একটি বাক্য বলার প্রচলন আছে, ‘মামুর বুঠা। বুললেই তো বুলবেহেনি যে বুইলছে।’ আবার বিভিন্ন নাটকে রাজশাহীর স্থানীয় ভাষার আলোচিত বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে।

রাজশাহীর ভাষায় অ্যানিমেশন তৈরি করার জন্য ২০১১ সালে ইয়াসিন রেজা ও ফয়জুল মতিন নামে দুজন রাজশাহী নগরের অলোকার মোড়ে ‘স্টিমিং ব্রেইন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। প্রায় এক বছর ধরে কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানটি ১৫০টি কার্টুন তৈরি করে। সেখানে হাবা ও গোবা নামের দুটি চরিত্রের মুখে রাজশাহীর ভাষা কথা বলানো হতো। বর্তমানে তা বন্ধ আছে।

গবেষণামূলক লেখা থেকে জানা যায়, রাজশাহী শহরের স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষায় ‘স’–এর জায়গাটি দখল করে নিয়েছে ‘শ’ আর ৫০ কিলোমিটার দূরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্থানীয় ভাষায় ‘ছ’–এর প্রভাব খুব বেশি। সেখানে শ-ষ-স–এর জায়গা দখল করে নিয়েছে ‘ছ’। আবার ‘আ’–এর জায়গা নিয়েছে ‘হ’। রাজশাহীতে বাসকে উচ্চারণ করা হয় ‘বাশ’, সিনেমাকে ‘শিনেমা’, সিদ্দিককে ‘শিদ্দিক’, স্যারকে ‘শার’।

রাজশাহীর উপভাষা নিয়ে গবেষণা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক পি এম শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রমিত বাংলা চালু হওয়ার হাজার বছর আগে থেকেই বাঙালিরা আঞ্চলিক ভাষায় তাঁদের মনের ভাব প্রকাশ করে আসছেন। তবে এক ভাষার প্রভাবে আরেকটি উপভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। তাঁর রাজশাহী অঞ্চলের ভাষার গবেষণায় উঠে এসেছে সব আঞ্চলিক ভাষাই শুদ্ধ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: