চাঁপাইনবাবগঞ্জ | মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ info@mohanonda24.com +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাইরে অন্যান্য জেলায় যারা বাস করেন তারা শুধু এই রুটি বানানোর জন্য এলাকা থেকে এই মাটির খোলা কিনে নিয়ে যান, বলে জানান আমেনা খাতুন। রুটি সেঁকার এক পর্যায়ে তা ফুলে উঠে অন্যান্য রুটি, পরোটার মতো করেই। তবে এখানেই রুটি দুটি অংশে ভাগ হয়ে যায়।

তৃপ্তি ভরা এক খাবার

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী ২০২৩ ০৯:১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী ২০২৩ ০৯:১৭

ঐতিহ্যবাহী কালাইয়ের রুটি

কালাইয়ের রুটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় খাবার। পুষ্টিকর ও মুখরোচকও বটে। একসময় মাসকলাইয়ের ডালের সহজলভ্যতার কারণে এই অঞ্চলে কালাই রুটির ব্যাপক প্রচলন হয়। মাঠে কাজ করা শ্রমজীবী মানুষের জন্য এই রুটি ছিল প্রতিদিনের খাবার। আকারের দিক থেকে কালাইয়ের রুটি সাধারণ রুটির প্রায় দ্বিগুন, সেটা ব্যাসার্ধ আর পুরুত্ব দুই হিসেবেই। রুটির তৈরির প্রক্রিয়া জানতে যাওয়া হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ মাস্টার পাড়ার গেরস্ত বাড়ি মাস্টার মঞ্জিলে।

এই বাড়ির গৃহিনী আমেনা খাতুন বলেন, “দুটি কালাইয়ের রুটি তৈরি করতে মাসকলাইয়ের আটা লাগবে প্রায় ২৫০ গ্রাম। সঙ্গে মেশানো হয় ১০০ গ্রাম চালের আটা। আটার মিশ্রণের ওপর নির্ভর করে রুটির রং কেমন হবে। কালাইয়ের আটা বেশি থাকলে রুটি শক্ত হবে, আর চালের আটা বেশি দিলে রুটি হবে নরম। তবে সাধারণ রুটি, পরোটার তুলনায় কালাইয়ের রুটিকে শক্তই বলতে হবে। সব উপকরণ একসঙ্গে পরিমাণ মতো মিশিয়ে পানি দিয়ে মণ্ড তৈরি করা হল। সেই মণ্ড থেকে একটি টেনিস বলের আকারের সমান মণ্ড তুলে একটি রুটি বানানোর কাজ শুরু হয়। রুটিটি বানানো হয় দুই হাতের সহায়তায়। হাতের তালু আর আঙুল দিয়ে চেপে চেপে অনেকটা নৃত্যের ভঙ্গিতে সেই গোল মণ্ড গোলাকার রুটির রুপ পায়। এক সয়ম রুটি প্রায় প্লেটের আকার ধারন করে। এটিকে সেকা হয় মাটির দ্বারা তৈরি এক প্রকার পাত্রে। এর আঞ্চলিক নাম হচ্ছে খোলা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাইরে অন্যান্য জেলায় যারা বাস করেন তারা শুধু এই রুটি বানানোর জন্য এলাকা থেকে এই মাটির খোলা কিনে নিয়ে যান, বলে জানান আমেনা খাতুন। রুটি সেঁকার এক পর্যায়ে তা ফুলে উঠে অন্যান্য রুটি, পরোটার মতো করেই। তবে এখানেই রুটি দুটি অংশে ভাগ হয়ে যায়।

আটার রুটি, পরোটা আগাগোড়াই নরম। তবে কালাইয়ের রুটির নিচের অংশটা নরম আর ওপরের অংশ কুড়মুড়ে চিপসের মতো। স্থানীয় ভাষায় একে বলে ‘বুকলা’। কালাইয়ের রুটির প্রকৃত স্বাদ পেতে হলে তা গরম অবস্থায় খেতে হবে। এই রুটি মূলত সকালের নাস্তার পদ হলেও অনেকে রাতেও খান আজকাল। রুটি বানাতে বানাতে নিজের শৈশবে ফিরে যান আমেনা খাতুন।

আর বেগুন পুড়িয়ে যেটা তৈরি করা হয় সেটার আঞ্চলিক নাম হচ্ছে ভরতা। কালাইয়ের রুটি দিয়া বেগুনের ভর্তা খায়তে অনেক ভালো লাগে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: