চাঁপাইনবাবগঞ্জ | বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ info@mohanonda24.com +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩
স্বপ্নের সন্ধানে জীবনে প্রথমবার ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি)। সকলের মতো তারও ইচ্ছে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে মধ্যবিত্ত পরিবারে সকলের মুখে হাসি ফুটাবেন। কিন্তু আশানুরূপ পরীক্ষা দিতে পারেননি মিষ্টি।

যানজটের কাছে হার মানল মেহেরুন্নেসার স্বপ্ন।

আ/স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২৩ ১৭:৫৭

আ/স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২৩ ১৭:৫৭

ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক:- মেহেরুন্নেসা মিষ্টি উচ্চ মাধ্যমিকে মিরপুর ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে পাস করেছেন। পরিবারের সঙ্গে সাভারে থেকে পড়াশোনা করেন মিষ্টি। তার স্বপ্ন বড় হয়ে বিসিএস ক্যাডার হবেন। এজন্য এইচএসসি পাসের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোচিংয়ে ক্লাস শুরু করেন মনোযোগ দিয়ে।

স্বপ্নের সন্ধানে জীবনে প্রথমবার ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি)। সকলের মতো তারও ইচ্ছে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে মধ্যবিত্ত পরিবারে সকলের মুখে হাসি ফুটাবেন। কিন্তু আশানুরূপ পরীক্ষা দিতে পারেননি মিষ্টি।

বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে আবারও দ্বিতীয়বারের মতো পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন সমন্বিত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পরীক্ষায়। কিন্তু গত দুদিন ধরে অসুস্থ থাকায় সাভার থেকে বড় বোনের সঙ্গে রওনা দিতে খানিকটা দেরি হয়ে যায়। সকাল সাড়ে নয়টায় সাভার থেকে বাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বের হন তিনি। কিন্তু ঐ দিনে গুচ্ছের মানবিক বিভাগের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা এবং চাকরির পরীক্ষা থাকায় তীব্র যানজটের কবলে পড়েন এ শিক্ষার্থী।

 

অসুস্থ শরীর নিয়ে তীব্র যানজটের সঙ্গে প্রচণ্ড গরমে দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে বাস এসে পৌঁছায় বাহাদুর শাহ পার্কে। সেখান থেকে ভিড় ঠেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ১২টা ১০ মিনিটে এসে তাড়াহুড়ো করে গেট দিয়ে প্রবেশ করেন তিনি। স্বেচ্ছাসেবকের সহযোগিতায় দৌড়ে তাড়াহুড়ো করে রফিক ভবনের চতুর্থ তলায় পৌঁছাতে সময় লেগে যায় আরও ১০ মিনিট। ১২টা ২০ মিনিটে নিজ পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করলে প্রথমে ভুল করে অন্য কক্ষে চলে যান এই শিক্ষার্থী।

পরে স্বেচ্ছাসেবকের সহায়তায় পুনরায় ভাষা শহীদ রফিক ভবনের তৃতীয় তলায় ৪০১ নম্বর কক্ষে আসলে শুরুতেই প্রশ্নপত্র এবং ওএমআর হাতে তুলে দেন দায়িত্বরত শিক্ষক। কিন্তু পুনরায় তাকে চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে বলে প্রশ্নপত্র এবং ওএমআর নিয়ে নেন ওই শিক্ষক। ততক্ষণে ১২টা ৪০ বেজে গেলে ওই শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার হল থেকে প্রশ্নপত্র এবং ওএমআর নেই বলে বের করে দেন পরীক্ষক।

অনলাইন এক সংবাদ মাধ্যমে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, আমাকে কেন এভাবে হেনস্তা করেছে তারা। গেট থেকে তো আমাকে বের করে দিতে পারত। আমার হাতে ৪০ মিনিট সময় থাকার পরেও আমাকে কেনো পরীক্ষা দিতে দেয়নি আমি জানি না। অথচ আমার পরে এসেও অন্য কয়েকজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চেয়ারম্যান স্যারের কাছে গেলে তিনি আমাকে পুনরায় ডিনের কাছে যেতে বলেন। তারা আমার স্বপ্নটা এভাবে ভেঙে দেবে আমি ভাবতে পারি নাই। আমি চাই ভবিষ্যতে যেন এরকম পরিস্থিতি অন্য কোনো শিক্ষার্থীর সাথে না হয়। আমার মতো আর কোনো মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ের স্বপ্ন যেন না শেষ হয়। আমি আবেদন করেছি উপাচার্য বরাবর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। উপাচার্য স্যার দুঃখ প্রকাশ করেছেন এ ঘটনার জন্য।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, শিক্ষার্থীরা ২০-৩০ মিনিট দেরি করে আসলেও পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিয়েছি। তবে এটা মানবিক দিক বিবেচনা করেই। পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্বরত শিক্ষকরাই এটি দেখবে। আজকে উপকেন্দ্র নটরডেম কলেজের একজন পরীক্ষার্থী ভুল করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলে এসেছে। তাকেও পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আগে বিষয়টি জানানো হলে কোনো কিছু করা যেত। যেহেতু পরে জানানো হয়েছে, সেহেতু এখন আর দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া কিছু করার নাই।

শিক্ষকের হেনস্তার বিষয়ে জানতে চাইলে জবি উপাচার্য বলেন, আমাকে যদি লিখিত অভিযোগ দিয়ে যায়, অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে মেহেরুন্নেসা উপাচার্য বরাবর পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষকের হয়রানির প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: