
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্তে সংবিধান পূর্ণলিখন, সীমান্ত হত্যা ও অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ এবং রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানসহ ১১ দফা দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে সার্বভৌমত্ব আন্দোলনের প্রতিনিধিরা। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের চৌকা সীমন্তবর্তী বাখের আলী বাজারে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ভারত বাংলাদেশের জনগনকে নয় ভালোবাসে আওয়ামী লীগকে। তাই ভারত বাংলাদেশের জনগণের উপর এই ধরনের আগ্রাসন চালাচ্ছে। তারা প্রতিনিয়ত চাই যে বাংলাদেশ জনগণের ক্ষতি হোক। তাই তারা বন্যার পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদের সমস্যা সৃষ্টি করে এবং প্রতিটি সীমান্তেই আগ্রাসন চালাচ্ছে তারা। তাই আসুন আমরা জুলাই-আগষ্টের গণঅভ্যুথানের চেতনায় বৈষম্যমুক্ত বংলাদেশ গড়তে সকল বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসাথে কাজ করি।
সংগঠনের পক্ষ থেকে এগোরে দফা দাবী গুলো তুলে ধরেন সার্বভৌমত্ব আন্দোলনের সংগঠক ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালাবাগ শাখার সহ-সমন্বয়ক রায়হান আহমেদ হিমেল।দাবীসমূহ হলো:-
১। সংবিধান পূর্ণলিখনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণপ্রজাতন্ত্রের পরিবর্তে একটি জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা।
২। বৈদেশিক শক্তির যেকোন আগ্রাসন মোকাবেলায় প্রাপ্ত বয়স্কদের (যাদের বয়স নূন্যতম ১৮ থেকে ৪০) পর্যায়ক্রমে নূন্যতম তিন মাসের সামরিক প্রশিক্ষন প্রদান করা।
৩। কোন একক দেশ বা শক্তির প্রতি আনুকুল্যের পরিবর্তে আন্তজার্তিক ও আঞ্চলিক পরিসরে ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করা।
৪। যেহেতু দেশ ও সার্বভৌমত্বের মূল মালিক জনগণ। তাই সকল বৈদেশিক চুক্তি জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। বিশেষ করে হাসিনার কতৃত্ববাদ ও ফ্যাসিবাদী শাসন আমলে সম্পাদিত জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব পরিপন্থি সকল চুক্তি বাতিল করতে হবে। তবে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রয়োজনে প্রতিরক্ষা ও সংবেদনশীল চুক্তি সমূহের গোপনীয়তা রাখা যাবে।
৫। তথাকথিত বন্ধুত্বের নামে বাংলাদেশের ভু-রাজনৈতিক উপাদানকে অন্য কোন দেশের অধীনস্ত করা যাবে না, যাতে বাংলাদেশ অন্য কোন দেশের ওয়্যার থিয়েটার (যুদ্ধ মাঠ) পরিণিত না হয়।
৬। অভিন্ন আন্তজার্তিক নদীর পানির নায্য হিৎসা আদায়ের জন্য আঞ্চলিক ও আন্তজার্তিক পরিমন্ডলে উদ্যোগ নেওয়া।
৭। পানি আগ্রাসন থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাতে বর্ষার ও বন্যার পানি ধরে রাখার জন্য অবিলম্বে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা ও পানি ব্যাবস্থাপনার নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা।
৮। সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিক হত্যার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।
৯। বাংলাদেশের সমুদ্র সীমায় অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ এবং সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকর ব্যাবস্থা গ্রহণ করা।
১০। রোহিঙ্গা শরনার্থী সমস্যা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য বড় ঝুঁকি। এটা মায়ানমারের সৃষ্টি একটি বড় বিপর্যয় এবং মানবতা বিরোধী অপরাধ। তাই রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার সুরক্ষার স্বার্থে আন্তজার্তিক আইন অনুসরণ করে মায়ানমারকে রোহিঙ্গাদের তার নিজ ভুমিতে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করা।
১১। সাইবার আক্রমণ থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব, প্রতিরক্ষা অবকাঠামো, কে.পি.আই ও দেশের সম্পদ রক্ষায় সাইবার আর্মি গঠনসহ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন , সার্বভৌমত্ব আন্দোলনের সংগঠক ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালাবাগ শাখার সহ-সমন্বয়ক রায়হান আহমেদ হিমেল, সার্বভৌমত্ব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ছাত্র প্রতিনিধি আল মুজাহিদ লিঠু, বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য বাদশাসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: