চাঁপাইনবাবগঞ্জ | বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ info@mohanonda24.com +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩
পাকিস্তানের পেশোয়ারের পুলিশ লাইনস এলাকায় একটি মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ জন ।

পাকিস্তানে মসজিদে হামলায় নিহত বেড়ে ৯২

জা.র/ স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০২:২১

জা.র/ স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০২:২১

বিস্ফোরণের ফলে মসজিদের ছাদ ও দেয়ালের কিছু অংশ ধসে পড়েছে। ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের পেশোয়ারের পুলিশ লাইনস এলাকায় একটি মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ জন । আহত হয়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক। ৩১ তারিখ গতকাল সোমবার জোহরের নামাজের সময় এই বিস্ফোরণে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই পুলিশের সদস্য বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।

 

পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার যোহরের নামাজের সময় এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, তখন মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন কয়েকশ মুসল্লি। স্থানীয় সময় আনুমানিক ১.৪০ মিনিটে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে এবং মসজিদ ভবনের ছাদ ও দেয়ালের কিছু অংশ ধসে পড়েছে। এতে বেশ কয়েকজন নিচে চাপা পড়ে, বিশেষ করে যারা নামাজের সময় সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে ছিল।

 

বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সেনাবাহিনী, জরুরি সেবা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা। এ সময় ঘটনাস্থলে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

 

মঙ্গলবার স্থানীয় লেডি রিডিং হাসপাতালের মুখপাত্র মোহাম্মদ আসিম জানিয়েছেন, সমস্ত মৃত ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে বেশিরভাগরেই অবস্থা আশঙ্কাজনক। স্থানীয় নাগরিকদের রক্তদানের জন্য আবেদন করেছেন তিনি।

 

আসিম আরও বলেন, সোমবার মোট ১৫৭ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল এবং তাদের বেশিরভাগকে চিকিৎসার পর বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ৫৭ জন তাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

 

এদিকে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন পাকিস্তান তালেবান বা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান ( টিটিপি )। সোমবার বিকেলে এক টুইট বার্তায় পাকিস্তানি তালেবানের একজন কমান্ডার সারবাকাফ মোহমান্দ এই হামলার দায় স্বীকার করে দাবি করেছেন, মসজিদে আত্মঘাতী হামলাটি তার ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধমূলক হামলার অংশ ছিল।

 

বার্তা সংস্থা এএফপি বরাতে জানা গেছে, মোহমান্দ নিহত টিটিপি কমান্ডার উমর খালিদ খুরাসানির ভাই। গত আগস্টে আফগানিস্তানে এক অভিযানে খুরাসানি নিহত হয়েছিল।

 

অন্যদিকে মসজিদে হামলার ঘটনার পরপরই পেশোয়ারসহ সারা দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দেয় সরকার। এ ছাড়া রাজধানী ইসলামাবাদে নিরাপত্তাসংক্রান্ত উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

 

উল্লেখ্য, বিগত কয়েক মাসে পাকিস্তানের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। সারা দেশজুড়ে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো। এসব হামলার বেশির ভাগই ঘটাচ্ছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তালেবানের সঙ্গে টিটিপির ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ রয়েছে। গত বছর নভেম্বরে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে ‘যুদ্ধবিরতির’ সমাপ্তি টানে টিটিপি। তারপরই তারা পাকিস্তানে হামলার পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে।

 

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এটিকে সন্ত্রাসী হামলা আখ্যা দিয়ে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, পাকিস্তানকে রক্ষা করার দায়িত্ব যারা পালন করছে, তাদের ওপর হামলা চালিয়ে আতঙ্ক তৈরি করতে চাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। যারা এ ঘটনার পেছনে রয়েছে, ইসলামের সঙ্গে তাদের দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পুরো জাতি এখন ঐক্যবদ্ধ। যারা পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াই করছে তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে।

 

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি বলেছেন, এই হামলার পেছনে যা রয়েছে সেই সন্ত্রাসী ও তাদের সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা হবে।

 

দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইরমান খান টুইট বার্তায় বলেন, পুলিশ লাইন মসজিদে নামাজের সময় সন্ত্রাসী আত্মঘাতী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। নিহত ও আহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: