চাঁপাইনবাবগঞ্জ | মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ info@mohanonda24.com +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩
চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। টিসিবি লাইনে মানুষের সংখ্যা প্রতিদিন বেড়েই চলছে।

ডিম এখন ছোঁয়া যায় না : মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০২:০৯

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০২:০৯

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

নিউজ ডেস্ক: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগস্ট থেকে আমরা আন্দোলন করছি। আমাদের দেশে খেটে খাওয়া মানুষ শ্রমিক-দিনমজুর-কৃষক-তাতি-কুমার, সবাই কষ্টে আছেন। চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। টিসিবি লাইনে মানুষের সংখ্যা প্রতিদিন বেড়েই চলছে। প্রোটিনের জন্য মানুষ ডিম খেত। কিন্তু সে ডিম এখন আর ছোঁয়া যায় না। বয়লার মুরগির হঠাৎ করে কেজিতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা বেড়ে গেছে। সবকিছুর দাম বেড়েছে। বাড়ি ভাড়া বেড়েছে। যে কারণে শহর থেকে গ্রামে যাচ্ছে মানুষ। ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে। কারণ এতে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের হল রুমে জাতীয়তবাদী তাতিদলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। তাতীদলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব হাজী মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এ সভায় বিএনপির মহাসচিব সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সেখানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের ওপর যে নির্যাতন হচ্ছে, তা আমরা জানি। আমাদের উপর নির্যাতন হবে এটাও আমরা জানি। আমরা সত্যের পথে আছি, দেশের কথা বলছি, মানুষের কথা বলছি। নির্যাতনের কথা বলে তো আর লাভ নেই। নির্যাতন আওয়ামী লীগ করবেই। নির্যাতন করেই তারা টিকে আছে। সেজন্য তাদের সরাতেই হবে। এটাই আমাদের প্রধান কাজ।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর রেগুলার বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে, বলছেন এত উন্নয়ন দিচ্ছি, তারপরও এরা চিৎকার করে কেন! আরে উন্নয়ন করছেন কার? উন্নয়ন করছেন আপনাদের নিজেদের। উন্নয়ন করছেন আপনাদের যারা আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব তাদের। যারা আপনাদের দলের মানুষ যারা আপনাদের আশ্রয় আছেন তাদের উন্নয়ন করছেন। তারাই ইতোমধ্যে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। অথচ সাধারণ মানুষ না খেয়ে, কর্মসংস্থান না পেয়ে, বেকার হয়ে পড়ছে তাদের জীবন চলছে না। সরকারি হিসাবে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশ। অথচ আয় কিন্তু পাঁচ শতাংশও বাড়েনি।

 

তিনি আরোও বলেন, তাঁত শিল্পে কোনো বিনিয়োগ নাই, বিদেশ থেকে কোনো বিনিয়োগ পাচ্ছে না। নতুন কোনো কলকারখানা তৈরি হচ্ছে না। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে না। তাই মানুষের কাজের কোনো ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে না।

 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কেটে টাকা বিদেশ পাচার করছে সরকার। রিজার্ভের টাকা নিচে নেমে এসেছে। আজকে কেউ বিনিয়োগ করছে না। এসব কিছুর জন্য দায়ী এই অবৈধ সরকার। আর প্রধান কারণ হচ্ছে এই সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। তাদের কাউকে জবাব দিতে হয় না। এমন একটা পার্লামেন্ট বানিয়েছে যে পার্লামেন্টে কোনো নির্বাচনই হয়নি। ১৪ সালে ১৫৪ জনকে বিনাভোটে সংসদ সদস্য বানিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি, বাম দলের লোক আছে। ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় এখন তাদের অনেকেই কথা বলছে। তারা আওয়ামী লীগের চেয়েও খারাপ।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে নাটক শুরু করেছে সরকার। খালেদা জিয়াকে নিয়ে এত দরদ উথলে উঠলো কেন? সরকার দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। খালেদা জিয়ার যখন রাজনীতি করার সময় আসবে তখন করবেন যেখানেই থাকুক। এটা নিয়ে আওয়ামী লীগের মাথা না ঘামালেও চলবে।

 

সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এটিই একমাত্র লক্ষ্য জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিনের হরতাল যখন করেছে তখন সংবিধানে ছিল না। সঙ্কট সমাধানে বেগম খালেদা জিয়া তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা করেছিল। যতোবার ভোট চুরি করেছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি কখনো ভোট চুরি করেনি। আওয়ামী লীগের লজ্জা হওয়া উচিৎ বিএনপির ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে, তারপর মামলা নিয়ে বাণিজ্য করছে। পুলিশকে ব্যবহার করছে, র‌্যাবকে ব্যবহার করছে। মার্কিনীরা নিষেধাজ্ঞা দিবে এটি নিয়ে রাজনীতি করবে, এটি বিএনপি চায় না। নিজের পকেট ভারির স্বার্থে উন্নয়ন করছে সরকার। ঐক্যবদ্ধ থেকে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় দাবি এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং অনির্বাচিত সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেই কমিশন নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। সে নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন করবে। আগস্ট মাস থেকে আমরা যখন চাল-ডাল, তেল-লবণের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করতে শুরু করেছি। তখন থেকে তারা গুলি করে হত্যা করতে শুরু করেছে। আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মীকে-আন্দোলনকারীকে প্রকাশ্যে রাজপথে গুলি করে মেরেছে। ইতোমধ্যে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে সরকার। এখনো আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী জেলে রয়েছেন। এই যে ভয়াবহ একটি দুর্বিষহ অবস্থা। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় কেন আপনাদের? ভয় একটাই, সেটা আপনারা খুব ভালো করে জানেন, সেটা হলো নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে।

 
 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: