চাঁপাইনবাবগঞ্জ | মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ info@mohanonda24.com +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩
দেশ নিয়ে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

দেশ নিয়ে কোন আগ্রহ নেই বিএনপির

আ/রিপোর্টার | প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩২

আ/রিপোর্টার
প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩২

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

নিউজ ডেস্ক: দেশ নিয়ে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। তাদের আগ্রহ কেবল খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতি। তারা সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চান। আমরাও চাই, কারণ তার সাজা কার্যকর করতে হবে।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস বলেছেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশ নিয়ে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই। তাদের সব আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানিয়ে রেখেছে। তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন দেখে। আমরাও চাই, তিনি ফিরে আসুক। তিনি শাস্তির মুখোমুখি হোক। তার বিচার হোক, আমরা সেটি চাই। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য কেমন আছে এ নিয়ে তাদের সব আগ্রহ। জনগণ-দেশ নিয়ে তাদের ভাবনা নেই। যারা গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি অশ্রদ্ধাশীল, তারাই বলতে পারে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রতি তাদের কোনো আগ্রহ নেই।

রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাহাবুদ্দিন চুপ্পু সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. হাছান বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একজন অসাধারণ ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আমাদের সংসদীয় দলের বৈঠক বসেছিল গতকাল (শনিবার)। তখন রাষ্ট্রপতি পদের মনোনয়নের জন্য সংসদীয় দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই ক্ষমতাবলে তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে (সাহাবুদ্দিন) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একজন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তখন পদ্মাসেতুতে দুর্নীতির অসত্য মিথ্যা অভিযোগ তুলে দুদককে যে চাপ দেওয়া হচ্ছিল, তা মোকাবিলায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আপনারা জানেন, পদ্মাসেতুতে যে দুর্নীতি হয়নি, কানাডার আদালতে তা প্রমাণিত। কানাডার আদালতে কিন্তু বিশ্বব্যাংক গিয়েছিল এবং বিশ্বব্যাংক সেখানে হেরে গিয়েছে। কানাডার আদালত রায় দিয়েছে, পদ্মাসেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ গল্প ছাড়া কিছু না। কিন্তু তারপরেও দুদক কমিশনারের দায়িত্ব পালনকালে তার ওপর অনেক চাপ ছিল। সেক্ষেত্রে তিনি দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছেন। আমি মনে করি, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা একজন অসাধারণ ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দিয়েছেন। এমন একজনকে মনোনয়ন দিয়েছেন, যিনি ঝুঁকি নিয়েছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিবাদ করেছেন। যার মধ্যে ভদ্রতা, নম্রতা ও রাজনৈতিক বিজ্ঞতা রয়েছে।

বিএনপির পদযাত্রা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, সারাদেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে দিতে বিএনপি পদযাত্রা করছে। দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অসৎ উদ্দেশ্য ছিল তাদের। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সতর্ক পাহারায় ছিল। শান্তি সমাবেশ করেছে, যে কারণে বিএনপি যেভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, তারা তা পারেনি।

বিএনপির কর্মসূচির সঙ্গে আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কোনো পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছি না। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি থাকবে। কারণ, আওয়ামী লীগ রাজপথের দল, ক্ষমতায় থাকলেও আমরা কর্মসূচি দেব, না থাকলেও দেবো।

এর আগে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করেন। এসময় বিএসপি সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু ও সেক্রেটারি এম জি কিবরিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার গণমাধ্যমবান্ধব। দেশে সংবাদমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। পৃথিবীর অনেক বড় দেশেও সংবাদমাধ্যম নেই। বের হয় না ১০০ পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে যেসব পত্রিকা কেবল বিজ্ঞাপন দিলেই বের হয়, যারা কেবল তদবির করে বেড়ায়, তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। কারণ তাদের কারণে অন্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিজ্ঞাপন কমে এসেছে। আগে চারশোর বেশি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো, এখন তা পঞ্চাশে নেমে এসেছে।

বিএসপির পক্ষ থেকে বলা হয়, কাগজের দাম ও প্রিন্টিং উপকরণের দাম বেড়েছে। তাদের সংবাদপত্র বর্তমান সরকারের পরিকল্পিত উন্নয়ন ধারাকে সাধারণ পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে একনিষ্ঠ ভূমিকা রেখে আসছে। জেলা পর্যায় থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সরকারের সুনির্দিষ্ট উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার বাস্তবায়ন, অগ্রগতি ও সাফল্যের সংবাদ প্রচার করে সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধ রচনায় আন্তরিক ভূমিকা রেখে আসছে।

তারা মন্ত্রীর কাছে ১৫টি দাবি তুলে ধরেছেন। যার মধ্যে রয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ইস্যুকৃত ক্রোড়পত্রের সব বকেয়া বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করা, জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় দৈনিক সংবাদপত্র তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় প্রণীত ক্রোড়পত্র নীতিমালা অনুযায়ী ইস্যু করা, মিডিয়া তালিকাভুক্ত দৈনিক সংবাদপত্রের সুষ্ঠু বিজ্ঞাপন বণ্টন ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তরের কমিটিতে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।

এছাড়াও বিজ্ঞাপন বণ্টন ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রীয়করণ করে তথ্য মন্ত্রণালয়ে ফিরিয়ে আনা, বিজ্ঞাপন ইনসারশন বৃদ্ধি করে সর্বনিম্ন ১০টি করা, মিডিয়া তালিকাবহির্ভূত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রচার ও প্রকাশ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, ডিএফপির ৯ম ওয়েজ বোর্ড মনিটরিং কমিটিতে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।

বিএসপির দাবির মধ্যে আরও রয়েছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) পরিচালনা বোর্ডে বিএসপির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা, সাংবাদিক কল্যাণ তহবিল ব্যবস্থাপনা পরিষদে বিএসপির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা ও বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদে বিএসপির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরিচালনা পরিষদের বিএসপির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালনা পর্ষদে বিএসপির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা, ঢাকা ওয়াসার পরিচালনা পর্ষদে বিএসপির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সভা ও সেমিনারে বিএসপির প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া। 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: